‘ব্লাডব্যাগ’-এর স্বপ্নযাত্রা
g টি এইচ মাহির
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক সংস্থা The Resolution Project আয়োজিত ‘এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল ২০২৩’-এর সোশ্যাল ভেঞ্চার চ্যালেঞ্জ জিতেছে বাংলাদেশের তিন তরুণের প্রজেক্ট ‘ব্লাডব্যাগ’। ব্লাডব্যাগ প্রজেক্টের প্রতিনিধি হিসেবে ফেলোশিপ অর্জন করেছেন তারা। রিজওয়ানুল হক ব্লাডব্যাগের একজন প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। ব্লাডব্যাগের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফজলে রাব্বি (রাবিব) পড়াশোনা করছেন ফুলপুর সরকারি কলেজে। তাদের ‘ব্লাডব্যাগ’ প্রজেক্ট এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে সোশ্যাল ভেঞ্চার চ্যালেঞ্জ জিতেছে।
The Resolution Project হল ইউএসভিত্তিক একটি বিশ্বব্যাপী অলাভজনক সংস্থা, যা সহযোগিতামূলক সামাজিক উদ্যোক্তার মাধ্যমে যুব নেতৃত্বের বিকাশকে উত্সাহিত করে। রেজল্যুশন প্রকল্পের দৃষ্টিভঙ্গি হলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের সামাজিক বিভিন্ন প্রজেক্ট ও কাজকে অনুপ্রাণিত করা। এখানে উদ্যমী তরুণদের তাদের প্রজেক্ট জমা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখান থেকে বাছাই করা প্রজেক্ট বিশেষজ্ঞ বিচারকদের একটি প্যানেলের সামনে বিভিন্ন দফায় উপস্থাপন করতে হয়। এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে তাদের সেরা প্রজেক্টের স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং প্রজেক্টের নির্মাতাদের ফেলোশিপ প্রধান করা হয়। এবার বাংলাদেশের ‘ব্লাডব্যাগ’ ফাইনালে এই চ্যালেঞ্জ জিতেছে। এবং এর প্রতিষ্ঠাতারা ফেলোশিপ পেয়েছে। The Resolution Project ব্লাডব্যাগের এই প্রজেক্টেকে অন্তত সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। বাংলাদেশ থেকে এর আগে তিনটি প্রজেক্ট সোশ্যাল ভেঞ্চার জিতেছে।
ব্লাডব্যাগ মূলত একটি ওয়েব অ্যাপভিত্তিক অলাভজনক প্রজেক্ট, যেখানে রক্তের প্রয়োজন হলে আবেদন করা যাবে সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে। যার ফলে মোবাইল নম্বর অসত্ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের আশঙ্কা কমে যায় অনেকাংশেই। রক্তের প্রয়োজন হলে www.bloodbag.app লিংকে প্রবেশ করে রোগীর তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। তারপর তা চলে যাবে ব্লাডব্যাগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপ এবং অন্যান্য মাধ্যমে বিভিন্ন ডোনারদের কাছে। টেলিগ্রামে ব্লাডব্যাগের চ্যানেলসহ রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী স্বতন্ত্র গ্রুপ রয়েছে, যাতে রোগীর তথ্য চলে যাবে। ডোনাররা তথ্য পেয়ে স্বপ্রণোদিতভাবে যোগাযোগ করবেন রোগীর সঙ্গে। চমত্কার এই প্রজেক্টটি তৈরি করেছেন রিজওয়ানুল হক, ফাতিন সাদাব লিয়ান, ফজলে রাব্বিসহ আরো কিছু উদ্যোমী তরুণ। এই তিন যুবক বাংলাদেশের তিন প্রান্ত থেকে একত্রিত হয়ে রক্ত আদান-প্রদানের একটি ইকোসিস্টেম তৈরির কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, ব্লাডব্যাগের এই উদ্ভাবনী প্রজেক্ট অর্জন করে নিয়েছে বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২২। সেই বছরের জুলাই মাসে এই প্রজেক্টের পরিকল্পনা করেন রিজওয়ানুল হক, যা লঞ্চ করেন ২০২৩ সালের জুলাই মাসে। বর্তমানে ব্লাডব্যাগের এই প্রজেক্ট নিয়ে আরো বড় স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সংশ্লিষ্টরা।